List of students who matriculated from Tejgaon Polytechnic High School in 1962
A.H. Jaffor Ullah
তেজগা পলিটেক্নিক স্কুল থেকে ১৯৬২ সনে দেয়া শেষ ম্যাট্রিক পরিক্ষায় উত্তীর্ন ছাত্রদের নামের তালিকা
সংগ্রহকঃ এ এইচ জাফর উল্লাহ (হাস্নু)।
নিউওর্লিয়ান্স, আমেরিকা। আগস্ট ২০১১
নিউওর্লিয়ান্স, আমেরিকা। আগস্ট ২০১১
আমার জানামতে প্রায় ৪০-৪২ জন ছাত্র ১৯৬২ সনে ম্যাট্রিক পরিক্ষায় পাশ করেছিল । এই ব্যাচের ছাত্রদের অধিকাংশই ১৯৫৬ সনে ক্লাস ৫ এ ভর্তি হয়। এরা স্কুলের নাম করা শিক্ষক যেমন পরিমল সেনগুপ্ত (ইংরেজী, ভূগোল), দীনেষ চন্দ্র (বাংলা), মাখন স্যার, রউফ স্যার (অঙ্ক), তাহের স্যার (ইংরেজী), হেড মৌলভী (আরবী), নুর মোহাম্মদ (হেড মাস্টার), আজিজ স্যার (ঊর্দূ), সালাম স্যার (ইতিহাস), হেকমত আলী শিকদার (ইংরেজী) এদের দ্বারা শিক্ষাপ্রাপ্ত হয়। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পাশ করে এদের অধিকাংশই কলেজে ভর্তি হয়। পরবর্তী জীবনে এদের কেউ কেউ ডক্টোরেট ডিগ্রি, মাস্টার্স্ ডিগ্রি ও ব্যাচেলার্স ডিগ্রি প্রাপ্ত হয়। চাক্রী জীবনেও এদের অনেকেই সাফল্যতা অর্জন করে। এদের বয়স এখন ৬৩-৬৪ বছর আর এরা এখন অবসরপ্রাপ্ত। তবে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন তারা এখনও চাকরী করছেন। এই লিস্টটিতে কিছু ছাত্রদের নাম নাও থাকতে পারে। সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর নামের তালিকা তৈরী করতে গিয়ে দেখি আমার স্মৃতিভ্রম কিছুক্টা ঘটেছে। তবে অন্য ছাত্রদের সাহায্য নিয়ে সেটি পূর্ন করা যেতে পারে ভবিষৎ এ।
১। অরুণ কুমার দাশ - মহাকালী কলেরা রিসার্চ স্টাফ-কোয়ার্টার এলাকা থেকে আসতো । পরীক্ষায় পাশ করে পশ্চিম বংগে খুব সম্ভবতঃ কোলকাতায় চলে যায়। সেখানে ফিজিক্সে মাস্টার্স করে কলেজে অধ্যাপনা করে আজীবন। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ১ম বিভাগ অর্জন করেছিল।
২। মোয়াজ্জেম হোসেন - কলাবাগান/ধানমন্ডী এলাকা থেকে আসতো। ঢা বি থেকে ফিজিক্সে মাস্টার্স করে আজীবন কলেজে অধ্যাপনা করেছে। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ১ম বিভাগ অর্জন করেছিল।
৩। এ এম মাহমুদ - নাখাল পাড়া থেকে আসতো। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম ব্যাচলর ও পরে হর্টিকালচারে মাস্টার্স করে আজীবন বি এ ডি সি তে চাকরী করে ডাইরেক্টর পদে উত্তীর্ন হয়ে অবসর গ্রহন করে। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ১ম বিভাগ অর্জন করেছিল।
৪। এ এইচ জাফর উল্লাহ (হাসনু) - তেজকুনীপাড়ার পোস্ট অফিস এলাকা থেকে আসতো। আদি দেশ সিলেট। বাবা, মঞ্জুর উল্লাহ্, সরকারী চাকরী করতেন ঢাকা সেক্রেটারিয়েটে। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম ব্যাচলর ও পরে ঢাকা এটোমিক এনার্জীতে গবেষণা করে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রোপ-বোটানীতে মাস্টার্স করে। ক্ষণকাল কলেজগেটের কৃষি ইন্সটিটউটে শিক্ষকতা করে ১৯৬৮-৬৯ সনে। পরে আমেরিকায় ১৯৬৯ সনে চলে যায় মলিকুলার বায়োলোজীতে ডক্টোরেট করতে। ১৯৭৪ সনে পি এইচ ডি লাভ করে। আমেরিকায় দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ এসোসিয়েটের চাকরী করার পর আজীবন চাকরী করে মার্কিন সরকারের কৃষি বিভাগে (ইউ এস ডি এ) বৈজ্ঞানিক হিসেবে নিউ ওর্লিয়ান্স শহরে। এখনও চাকরীরত। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ১ম বিভাগ অর্জন করেছিল।
৫। আনোয়ারুল আজিম (সকু) - মণিপুরীপাড়ার পশ্চিম প্রান্ত থেকে আসতো। তার বাবার নাম মৌলভী মালু মিয়া। আদি বাড়ী কুমিল্লা জেলা। ঢা বি থেকে অর্থনীতিতে ব্যাচেলার্স করার পর করাচী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি প্রাপ্ত হয়। আজীবন চাকরী করে বিদেশী বাণিজ্যিক সংস্থায় প্রথম সিলেটের চা-বাগানে ও পরে ঢাকায় ফোস্টার্স হুইলার কোম্পানীতে।
৬। আব্দুর রশিদ - রাজা বাজার এলাকা থেকে সে আসতো। বড় ভাইর বাসায় থেকে পড়াশোনা করতো। আদি দেশ রাজশাহী বা মাল্দহ। ঢা বি থেকে ফার্মাসীতে ব্যাচেলার্স ডিগ্রি করে। পরে সামরিক বাহিনীতে অফিসার্স পদে যোগ দেয়। কর্নেল পদ থেকে অবসর গ্রহন করে।
৭। আব্দুল মতিন - রাজ বাজার এলাকা থেকে আসতো। ভাল ফুটবল খেলতো স্কুল টিমে। এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি ১৯৬২ এর পর।
৮। গোলাম মোস্তফা (ল্যাংড়া মোস্তফা) - ইন্ডাসট্রিয়াল এরিয়া থেকে আসতো। দেশ ছিল চাঁদপুর। ব্যবসা করতো। পরে এর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।
৯। নুর আলী - রাজা বাজার এলাকা থেকে আসতো। ভাল ফুটবল খেলতো স্কুল টিমে। আদি বাড়ী পশ্চিম বংগের মুর্শিদাবাদ। ১৯৭১ সনে দেশ স্বাধীন হবার পর বিদেশী সাহায্য সংস্থায় কাজে যোগ দেয় এবং আজীবন সেখানে চাকরী করে। এখন অবসরপ্রাপ্ত।
১০। গোলাম সারোয়ার (টিপু) - প্রথম তেজগা থানা ও পরে রাহাত মঞ্জিল থেকে আসতো। টিপুর বাবা, গোলাম মস্তফা সাহেব, তেজগা থানার ওসি ছিলেন ১৯৫৭-৬০ পর্যন্ত। ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে খুব নাম হয় তার ১৯৬০-৭০ দশকে। পরে কোচ্ পদে আজীবন কাজ করে ঢাকায়।
১১। মতি রহমান (মতি) - লালদীঘির পশ্চিম পার হতে আসতো। ওর বাবা, গফুর মুন্সী সাহেব, একটি বাঁশের দোকানের মালিক ছিলেন তেজগা পোষ্টাপিসের পাশে। সেখানে মতিকে পাওয়া যেতো প্রায় সময়। মতি ম্যাট্রিক পাশ করে আর অন্যদের মতো সঙ্গে সঙ্গে কলেজে যায় নি। প্রায় ৫-৬ বছর পর সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিষয়ে প্রথম ব্যাচেলার ও পরে মাস্টার্স করে। পরবর্তী কালে কানাডার ম্যানিটোবায় ডক্টোরেট করে সেখানে চাকরী করে বছর কয়েক। এখন সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে।
১২। সানোয়ার আলী - মণিপুরী পাড়ার পশ্চিম প্রান্ত থেকে সে আসতো। ওর আদি বাড়ী জলপাইগুড়ি। কলেজে যেত ঢাকায়। পরে বিমান বাংলাদেশে স্টুয়ার্ডের চাকরীতে যোগ দেয় এবং আজীবন সেই পদে বহাল থাকে। ২০০০ সনের দিকে দেহত্যাগ করে।
১৩। গোলাম হুসেন হেদায়েত উল্লাহ (ফইয়া) - তেজকুনীপাড়ার পোস্টাপিস এলাকা থেকে আসতো। সে হাসনুর বড় ভাই। বার্মা ইস্টার্ন তেল কোম্পানীতে প্রথম পতেঙ্গা এয়ার-পোর্টে এবং পরে তেজগা বিমানবন্দর ও উত্তরা বিমানবন্দরে চাকরীরত ছিল। ১৯৯৩ তে সপরিবারে আমেরিকায় চলে আসে ইমিগ্রান্ট হিসেবে। এখন অরিগনের পোর্টল্যান্ড শহরে সপরিবারে বসবাস করে।
১৪। মাহবুব - রাজা বাজার এলাকা থেকে সে আসতো। স্কাউটিং করতো স্কুলে। ম্যাট্রিকের পর ব্যবসায় যোগ দেয়। খুব অল্প বয়সে বিয়ে করে নিজ বাড়ীর এক মেয়েকে। পরে সস্ত্রিক ইউরোপে চলে যায়। তার আর কোনো খোঁজ জানা নেই।
১৫। আরিফ - তেজগার বাহির থেকে সে আসতো। এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।
১৬। শামসুল হক (শামসু) - তেজকুনী পাড়ার পূর্ব প্রান্ত সো-মিল এলাকা থেকে সে আসতো। আদি বাড়ী নোয়াখালী। পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল । তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।
১৭। শামসুদ্দীন আহ্মদ (শামসু) - তেজকুনীপাড়ার পোস্টাপিস এলাকা থেকে আসতো। বি কম পাশ করে সে ব্যাঙ্কে যোগ দেয়। তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।
১৮। উইলফ্রেড রড্রিগাস (উলু) - ফার্মগেট-হলিক্রস সন্নিকটবর্তী খৃষ্টান পাড়া থেকে সে আসতো। ঢাকায় কলেজে লেখাপড়া করে পরে গভর্মেন্ট সার্ভিসে যোগ দেয়। উপসচিব হিসেবে অবসর গ্রহন করে। সে এখনও তার পৈত্রিক বাসায় হলিক্রস কলেজের পাশে থাকে।
১৯। মতিউর রহমান - মণিপুরীপাড়া হতে স্কুলে আসতো। আদি বাড়ী কুমিল্লা। তার কথায় কুমিল্লার আঞ্চলিক টান ছিল। ফর্শা এবং ছোট-খাটো সাইজের লোক ছিল সে । তার মামার বাসায় থেকে সে লেখাপড়া করতো। স্কুল পাশ করার পর এর আর কোনো খোঁজ পওয়া যায় নি।
২০। মোজাম্মেল হক কচি - তেজতরী বাজারে সে থাকতো গ্রীন রোডের কাছে। আদি বাড়ী মালদা-মুর্শিদাবাদ, বাবা সরকারী চাকরী করতেন। বি কম পড়ে সে ব্যাঙ্কে চাকরী নিয়েছিল। তার পোস্টিং ছিল তেজগা বিমান বন্দরে ১৯৭২-৭৪ সনে। সারা জীবন সে ব্যাঙ্কে কাজ করেছে অফিসার র্যাঙ্কে।
২১। শফি - মহাকালী থেকে সে সাইকেল যোগে আসতো। পরিবার কৃষিকাজে জড়িত ছিল। স্কুল পাশের পর এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২২। এস (সিব্তে) এস (সোবহান) জি (গোলাম) পাঞ্জাতন - কলেজগেট হতে সে আসতো, বাবা ছিলেন তেজগা কৃষি কলেজের অধ্যাপক। আদি বাড়ী কুমিল্লা শহর। বিজ্ঞান বিভাগে পড়তো ঢাকা কলেজে এবং পরে ঢা বি তে ফার্মাসী বিভাগে ভর্তি হয়ে ডিগ্রি লাভ করে। ১৯৭১-৭২ সনে সে ইমিগ্রেশন নিয়ে নিউইয়র্ক শহরে আসে। সেখানেই সে চাকরী করতো। এখন আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
২৩। কাদ্রী - রাহাত মঞ্জিলে সে থাকতো তার বড় ভাইর বাসায়। স্কুল পাশ করার পর তার আর হদিছ পাওয়া যায় নি। কাদ্রী বানোয়াট কথা বলতে খুব উস্তাদ ছিল। এর কথায় কেউ আমল দিত না।
২৪। মইনুদ্দীন - কারওয়ান বাজার বা পাকমোটর্স এলাকা থেকে সে আসতো। অত্যাধিক মোটা হবার জন্য তার ডাক নাম ছিল "মোটকা মইনুদ্দীন"। সে অত্যন্ত ফর্শা ছিল এবং গরমের সময় সে খুব ঘামতো এবং তার মুখ লাল হয়ে যেতো। স্কুল পাশের পর এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।
২৫। মইনুদ্দীন ২ - নাখালপাড়া হতে সে আসতো, মাহমুদের সম্পর্কে খালাতো ভাই। ক্লাশ ৮ বা ৯ এ সে অন্য জায়গা থেকে এসে আমাদের স্কুলে ভর্তি হয়। এর ও কোনো খোঁজ আমরা পাই নি। মাহমুদ পর্যন্ত এর আর কোনো খোঁজ পায় নি।
২৬। আকরাম খান - মনিপুরীপাড়াতে সে থাকতো তেজগা মসজিদের পেছনে লালদীঘির কাছে। ১৯৬৫-৬৬ সনে সে তেজগা কৃষি কলেজে ভর্তি হয়। খুব সম্ভবতঃ সে সরকারী কৃষি বিভাগে চাকরী নেয়। পরবর্তীতে এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২৭। ফারুক - ইটখোলা-খেজুরবাগান এলাকা হতে সে স্কুলে আসতো। আদি বাড়ী ছিল সিলেট। তার বাবা ছিলেন ইটখোলায় কৃষি বিভাগের ডিস্পেন্সারীর ডাক্তার। তারা থাকতো ডিস্পেন্সারীর পাশে একটি গভর্মেন্ট কোয়ার্টারে। ১৯৬৫-৬৬ সনে সে তেজগা কৃষি কলেজে ভর্তি হয়। খুব সম্ভবতঃ সে সরকারী কৃষি বিভাগে চাকরী নেয়। পরবর্তীতে এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২৮। মোঃ নুরুজ্জামান ওরফে ব্যায়ামবীর - স্কুলের পেছনে তেজতরীবাজার এলাকায় সে থাকতো। সব সময় সে পান চিবাতো। সেও আকরাম ও ফারুকের মত ১৯৬৫-৬৬ সনে তেজগা কৃষি কলেজে ভর্তি হয়। ডিগ্রিলাভের পর সে সরকারী চাকরী নেয়। বেশী দিন সে বাচে নি।
২৯। আবু (ডাক নাম), ভাল নাম জানা নেই - তেজকুনীপাড়া থেকে স্কুলে যেত। আদি দেশ জলপাইগুড়ি, বাবা-মা থাকতেন রংপুরে, তেজগায় মামার বাড়ীতে থেকে লেখাপড়া করে। সম্পর্কে সানওয়ার আলীর ভাগ্নে। স্কুল পাশের পর কি করেছে তা জানা নেই। আবুর ছোট ভাই রতন মামার বাড়ীতে থেকে প্রাইভেট ম্যাট্রিক দিয়ে ১৯৬২ সনে পাশ করে।
৩০। এর নাম আমার মনে নেই। নোয়াখালী তার দেশ, থাকতো তেজকুনী পাড়ায় তার চাচার বাড়ীতে। এর পারিবারিক নাম হয়তো ছিল হক । খুব ফর্শা ছিল দেখতে। আমরা তাকে 'মদিনা' বলে ডাকতাম। শুনেছি যে সে পুলিশ ডিপার্টমেন্টে যোগ দিয়েছিল।
৩১। এরও নাম আমার মনে নেই। ক্লাস ৯-১০ সে এসে যোগ দিয়েছিল। তেজগা থানার ওসির শালা ছিল সে তাই তার নাম দেয়া হয়েছিল 'শালাবাবু'। সে তেজকুনীপাড়ার থানার কম্পাউন্ডে থাকতো। কলেজে ভর্তি হয়েছিল। তবে এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।
Labels: childhood rememberance, memoir
0 Comments:
Post a Comment
Subscribe to Post Comments [Atom]
<< Home